Home Health Liver disease | Liver Disease Symptoms লিভার রোগ

Liver disease | Liver Disease Symptoms লিভার রোগ

liver-disease

Liver disease – লিভার রোগ

Liver – লিভার হল সবচেয়ে বড় গ্রন্থি, পাশাপাশি মানুষের শরীরের অভ্যন্তরীণ একটি অঙ্গ । এটি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে, যেমন হজম, পুষ্টির বিপাক ও সঞ্চয়, ওষুধ, মদ এর বিপাকের সময়ে উৎপন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থগুলির বিষ-নাশ, আর বিশেষ প্রোটিন ও রক্ত জমাট বাঁধার কাজ করে। যেহেতু যকৃৎ নানা রকমের কাজ করে, তাই যকৃতের রোগের উপসর্গও নানা প্রকারের। কিন্তু সব চেয়ে লক্ষণীয় যে উপসর্গ যা যকৃতের রোগ বলতে বোঝায় তা হল জন্ডিস। জন্ডিস হলে ত্বক এবং চোখ হলুদ রঙের হয়ে যায়, প্রস্রাবের রঙ হয় গাঢ় হলুদ। এর নির্ণায়ক পরীক্ষা হল আলট্রা-সো্নোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান অথবা যকৃতের বাইয়প্সি। যকৃতের রোগের চিকিৎসা নির্ভর করবে এর অন্তর্নিহিত রোগের উপরে। যকৃতের সিরোসিস রোগে যকৃতে প্রচুর দাগ দেখা যায়। সিরোসিস হলে অবশেষ যকৃৎ কাজ করতে ব্যর্থ হয়, যা যকৃতের রোগের অন্তিম ধাপের দুঃখজনক পূর্বাভাস।

Liver disease – লিভার রোগ এর উপসর্গ

Liver disease – লিভার রোগর প্রাথমিক পর্যায়ে কদাচিৎ উপসর্গ দেখা যায়। এমনকি যদি সেইগুলি থাকেও, তবুও তা অস্পষ্ট এবং অনির্দিষ্ট। তবুও, কিছু সাধারণ উপসর্গ আছে যেগুলি তীব্র হেপাটাইটিসের সময় দেখা যায়।

যকৃতে তীব্র হেপাটাইটিসে যে লক্ষণগুলি দেখায যায়:

  • অত্যধিক জ্বর।
  • বমি করার ইচ্ছা।
  • বমি করা।
  • জন্ডিস।
  • ত্বকে চুলকানি।
  • গাঢ় হলুদ রঙের প্রস্রাব।
  • চোখের সাদা হলুদ হয়ে যাওয়া।

দীর্ঘস্থায়ী যকৃতের রোগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • জন্ডিস।
  • পেট ব্যথা এবং ফোলা।
  • বমি করার ইচ্ছা।
  • বমি করা।
  • গোড়ালি এবং পায়ে ফোলা।
  • চুলকানি।          
  • স্পাইডার নায়েভি (ত্বকের উপরে, ছোট লাল মাকড়শার মত দেখতে রক্ত নালী)।
  • ক্ষুধামান্দ্য।
  • ওজন কমে যাওয়া।
  • খুব কম কাজ করলেও দুর্বলতা থাকে।
  • সহজে কালশিরা পড়ে।

যকৃতের রোগ সিরোটিক পর্যায়ে গেলে নতুন উপসর্গগুলি দেখা দিতে, যেমন:

  • বমিতে রক্ত থাকা (হেমাটেমেসিস)।
  • মলদ্বার থেকে রক্তপাত হওয়া।
  • পেটের মধ্যে তরল জমা হওয়া (এসাইটিস)।
  • গুলিয়ে ফেলা।

উপরের উপসর্গগুলি ছাড়াও যকৃতের কিছু রোগ কয়েকটি বৈশিষ্ঠপূর্ণ উপসর্গ দেখায় যা উপরে দেওয়া উপসর্গগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সিরোসিসের চিকিৎসা যদি না করা হয় তাহলে যকৃত কাজে ব্যর্থ হবে। এটি চিকিৎসার একটি জরুরি পরিস্থিতি যাতে  গুরুতর দিগভ্রান্তি, বিভ্রান্তি, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ এবং সাথে অসাড়তা এবং কোমা হতে পারে।

লিভার রোগ এর চিকিৎসা – Treatment of Liver disease

নির্ণয় অনুযায়ী যকৃতের রোগের চিকিৎসা করা হয়। কিছু অন্তিম ক্ষেত্রে, যখন চিকিৎসা করে আর রোগের নিরাময় সম্ভব নয়, তখন শুধু রোগের উপসর্গ জনিত কষ্ট উপশমের জন্য চিকিৎসা করা হয় অথবা রোগের জটিলতা কমানোর জন্য চিকিৎসা করা হয়। যে চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়, সেগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ভাইরাস বিরোধী চিকিৎসা  ভাইরাস সংক্রমণ জনিত দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি এবং সি রোগের চিকিৎসার জন্য সাধারণত দীর্ঘ দিন ধরে ভাইরাস বিরোধী ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।
  • এন্টিবায়োটিক চিকিৎসা  যকৃত ফুলে গেলে এন্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে দেওয়া হয়। কিন্তু গুরুতর অবস্থায় পুঁজ বার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয় এবং শিরার ভিতরে এন্টিবায়োটিক ঢুকিয়ে দিতে হয় যাতে রোগী তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে।
  • সম্মিলন থেরাপি  এটি অটোইমিউন হেপাটাইটিসের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এই থেরাপিতে, করটিকোস্টেরয়েডস, ইমিউনোসাপ্রেসিভ এবং এন্টি-ইনফ্ল্যামেটারি ওষুধগুলির সমন্বয় দেওয়া হয়। এই ওষুধগুলি শরীরের সুরক্ষা ব্যবস্থার অতি-কার্যকলাপ এবং যকৃতের ফোলা কমায়।
  • চিলেশান চিকিৎসা  উইলসন’স রোগের ক্ষেত্রে পেনিসিলামিন ক্লাসের ওষুধের দিয়ে তামা’র চিলেট করা হয়।  তামার স্থূলাণুগুলি ওষুধের সাথে যুক্ত হয়ে প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে যায়। বর্তমানে ট্রিয়েটিন ব্যবহার করা হচ্ছে কারণ এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া কম।
  • রক্তমোক্ষণের পুনরাবৃত্তি  বংশগত হিমোক্রোমাটোসিস রোগে এটি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে দেহের উচ্চ লোহার মাত্রা কম করার জন্য শিরা থেকে থেকে রক্ত বার করে নেওয়া হয়।
  • সহায়ক থেরাপি  যকৃতের কিছু এনজাইম বা প্রোটিন প্রয়োগ করা হয়। এই গুলি সহায়ক ওষুধ হিসাবে কাজ করে এবং যকৃতের কোষগুলির উপর চাপ কমায়।
  • শল্য চিকিৎসা বা যকৃত প্রতিস্থাপন   রোগ যদি গুরুতর হয় এবং উপশম সম্ভব না হয়, তাহলে যকৃত প্রতিস্থাপন করা হয়। এই প্রতিস্থাপন ক্যাডাভেরিক হতে পারে যেখানে একজন মৃত ব্যক্তির সম্পূর্ণ যকৃত প্রতিস্থাপন করা হয় অথবা একজন জীবিত দাতা ব্যক্তির যকৃতের কিছু অংশ প্রতিস্থাপন করা হয়।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে সম্মিলন থেরাপির সাথে জীবনধারার পরিবর্তন করে যকৃতের রোগের চিকিৎসা করা হয়। নিয়মিত এবং যত্নের সাথে যকৃতের ক্রিয়া এবং আলট্রাসাউন্ড দিয়ে মূল্যায়ন করাও জরুরী।

জীবনধারার পরিবর্তন

যকৃতের রোগ একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক দৈনিক কাজকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে, দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলির মোকাবেলা করার জন্য জীবনধারার বেশ কিছু পরিবর্তন করা প্রয়োজন যাতে রোগ এবং তার আনুষঙ্গিক উপসর্গ আর বাড়তে না পারে। কিছু রোগের চিকিৎসা করা হয় জীবনধারার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে, যেমন মদ্যপান বন্ধ করে, ওজন হ্রাস করে এবং আদর্শ বি-এম-আই প্রাপ্ত করে। যকৃতের রোগের চিকিৎসার জন্য জীবনধারার যে পরিবর্তন করা হয় সেগুলি হল:

  • খাবার গ্রহণের পরিকল্পনা 

সারা দিন বারে বারে অল্প অল্প খাবার খান, কারণ এক সাথে অনেকটা খাবার খেলে বা চর্বি সমৃদ্ধ খাবার খেলে যকৃতের উপরে চাপ বাড়বে এবং ক্ষতি হবে।

  • খাদ্য পরিবর্তন 

যকৃত প্রোটিনের বিপাকের সঙ্গে যুক্ত থাকে। তাই যকৃতের রোগ প্রোটিনের বিপাককে ব্যাহত করতে পারে। সুতরাং, খাদ্যের মধ্যে আরও কার্বোহাইড্রেট অন্তর্ভুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ, যা দীর্ঘসময় ধরে জন্য শক্তির যোগান দিতে সাহায্য করে। প্রোটিন খাওয়া উচিত নয় কারণ যকৃত প্রোটিনকে পর্যাপ্ত-ভাবে বিপাক নাও করতে পারে। ফলস্বরূপ, কিছু বিষাক্ত বাই-প্রোডাক্ট শরীরের মধ্যে জমা হয়ে মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করতে পারে। যাদের হিমোক্রোমাটোসিস রোগ আছে তাদের ভিটামিন সি কম নেওয়া উচিৎ কারণ এটা খাদ্য থেকে লোহার শোষণ বৃদ্ধি করে।

  • এনালজেসিক বা ব্যথা কমানোর ওষুধের ব্যবহার 

প্রায় সব ব্যথার ওষুধের বিপাক হয় যকৃতে এবং এদের প্রায় সবগুলিই হেপাটোটক্সিক (যকৃতের উপরে খারাপ প্রভাব আছে)। তাই যে কোনও ধরনের ব্যথা কমানোর ওষুধ ডাক্তারবাবুর পরামর্শ ছাড়া সেবন করা উচিৎ নয়।

  • ধূমপান থেকে বিরত থাকুন 

ধূমপান যকৃতের ক্ষতির পরিচিত একটি কারণ। সুতরাং, যকৃতের ক্ষতি এড়ানোর জন্য, ধূমপান এড়ানো ভালো।

  • ওজন নিয়ন্ত্রণ 

ওজন কমানো বা বি-এম-আই’র লক্ষ্য অর্জন করা, চর্বি জমা কমাতে সাহায্য করে এবং এতে যকৃতের ক্ষতি কম করে। একই সাথে এটি আরও আনুষঙ্গিক উপসর্গ কম করতে সাহায্য করে।

  • টিকা-করণ 

একটি ক্ষতিগ্রস্ত যকৃত হেপাটাইটিস ভাইরাস দ্বারা সহজেই প্রভাবিত হতে পারে। ভাইরাসের সংক্রমণ যকৃতে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। কাজেই হেপাটাইটিস ভাইরাসের বিরুদ্ধে নিজের টিকা-করণ করে নিন। এতে জটিলতা কম হবে।

Pharmacist. Nahid Chowdhury
B.Pharm (Bachelor In Pharmacy)

Follow Fashion Food Health-
Facebook Group Link: https://www.facebook.com/groups/fashionfoodhealth
Facebook Page Link: https://www.facebook.com/fashionfoodhealth
Instagram Link: https://www.instagram.com/fashionfoodhealth
Twitter Link: https://twitter.com/FashionFoodHeal
LinkedIn Link: https://www.linkedin.com/company/fashionfood-health

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here